অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন গ্রেপ্তার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক নেত্রী শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শারমিন জাহান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের’ স্বত্বাধিকারী। আজ রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তারের পর শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নকল মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেছেন বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ। মামলার আসামি করা হয়েছে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহানকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, নকল মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় আমরা অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলাম। তারা যে কারণ দেখিয়ে উত্তর দেখিয়েছিল তা সন্তোষজনক নয়। সেজন্য আমরা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
শারমিন জাহান আওয়ামী লীগের গত কমিটির মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে কোনো পদ না পেলেও দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। শারমিন ২০১৬ সালের ৩০ জুন স্কলারশিপ নিয়ে চীনের উহানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে উহানে লকডাউন শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তাঁর শিক্ষা ছুটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। এর মধ্যে চীনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের মার্চে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেন।
অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহান বলেন, আমি মাস্ক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নই, আমার কাজ সরবরাহ করা। আমি চারটি ধাপে মাস্ক সরবরাহ করেছিলাম। কিন্তু তৃতীয় দফার মাস্ক নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছে। চতুর্থ দফার মাস্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠলো না। আমি গত ১২ জুলাই হাসপাতালের একজন হিসাব কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলামের কাছে মাস্কগুলো হস্তান্তর করি। তখন কিন্তু তারা প্রশ্ন তুলেনি, তুলেছে অনেক পরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমি তাদের আগোচরে মাস্ক সরবরাহ করেছি। কিন্তু তা সঠিক নয়। তারা আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ১৮ জুলাই। আমি কারণ দর্শানোর নোটিশের পক্ষে জবাব দিয়েছিলাম ২০ জুলাই। তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করতেই পারে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনের মাধ্যমেই মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে।
- মতামত